শিশু বায়েজিদকেও বাঁচানো গেল না

 

গ্যাসের আগুনে দগ্ধ সাড়ে তিন বছরের শিশু বায়েজিদকেও বাঁচানো গেল না। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে একই ঘটনায় দগ্ধ তার মা-বাবা মারা গেছেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির শুক্রাবাদ এলাকার বাসায় তারা দগ্ধ হন। এরপর তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।  


ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন তরিকুল ইসলাম জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুটির শ্বাসনালিসহ শরীরের ৪৫ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল। এ কারণে শুরু থেকেই তার অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। এক পর্যায়ে তার অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করে।


এর আগে ২ অক্টোবর শিশুটির মা নিপা আক্তার (২৪) এবং ১ অক্টোবর বাবা টোটন মাহমুদ (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এভাবে পরপর তিন দিনে পরিবারটির তিন সদস্যের মৃত্যু হলো। এমন ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন তাদের স্বজনরা।


বায়েজিদের ছোট মামা রনিক হোসেন সমকালকে জানান, শুক্রাবাদ এলাকার ২৭ নম্বর সড়কের বাজার মসজিদের পাশের গলির বাসায় থাকত তাঁর বোনের পরিবার। ভগ্নিপতি টোটন একটি প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করতেন। আর গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন নিপা। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে ছোট ছিল বায়েজিদ। তার বড় বোন লামিয়া (৭) ও ভাই ইসলাম (৫) কিশোরগঞ্জের নিকলি উপজেলায় দাদির কাছে থাকে।


নিপার মা রেহানা বেগম জানান, তাদের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কাচারিকান্দি গ্রামে। গত মাসের ১ তারিখে শুক্রাবাদের বাসায় ওঠে তাঁর মেয়ের পরিবার। সেখানেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন রাত ৩টার দিকে রান্নাঘরে দিয়াশলাই ঠুকে চুলা ধরানোর সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গ্যাস লাইনের লিকেজ (ছিদ্র) দিয়ে বের হওয়া গ্যাস ঘরের ভেতর জমে ছিল। আগুনের সংস্পর্শে তা বিস্ফোরণ ঘটায় বলে সবার ধারণা। এরপর ভোর ৫টার দিকে নিপা নিজেই ফোন করে তাঁকে জানান, বাসায় আগুন লেগেছে। তারা দগ্ধ হয়েছেন। পরে বাড়িওয়ালা ও প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান।

Post a Comment

0 Comments